মালয়েশিয়ায় ৬১ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিল বারিসান ন্যাশনাল জোট। কিন্তু বুধবারের মালয় সুনামিতে ভেসে গেছে নাজিব রাজাকের জোট। বৃহস্পতিবার সকালে শোচনীয় পরাজয় মেনে নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
তবে বিস্ময়কর বিজয় পাওয়া বিরোধী জোট পাকাতান হারাপানের প্রধান ও মালয়েশিয়ার উন্নয়নের রূপকার মাহাথির মোহাম্মদ ফের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন নাজিব।
১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দেশটি শাসন করে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়েছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ। এ সময় তিনি মালয়েশিয়ার নেতৃত্ব দিয়ে যান শিষ্য নাজিবের হাতে।
সেই সাবেক শিষ্য দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় দেশ উদ্বিগ্ন হয়ে তার পতন ঘটাতে অবসর ভেঙে ৯২ বছর বয়সে রাজনীতির মাঠে ফেরেন মাহাথির। আর ফিরেই মাহাথির বুঝিয়ে দিয়েছেন মালয় জনগণের কাছে এখনও তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা।
এদিকে নাজিব নিজের হার মানলেও সাবেক গুরুর জয় মানেননি। তাই পরাজয়ের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেন, ২২২ আসনের পার্লামেন্টে কোনো দলই এককভাবে জয়ী হতে পারেনি। কাজেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নির্ধারণ করবেন দেশের সাংবিধানিক রাজা।
নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণায় দেখা গেছে, চারটি দল নিয়ে গঠিত মাহাথির মোহাম্মদের পাকাতান হারাপান জোট ১২২টি আসনে বিজয়ী হয়েছে।
কিন্তু পাকাতান হারাপান জোট হিসেবে নিবন্ধনভুক্ত হয়নি। মাহাথিরের জোটের সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছেন কারাবন্দি নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের দল পিপলস জাস্টিস পার্টি (পিকেআর)।
বিশ্লেষকরা বলেন, এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে- আনোয়ারের স্ত্রী ওয়ান আজিজাহ ওয়ান দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।
কিন্তু বিকল্প হিসেবে নাজিব রাজাক যুক্তি দেখাতে চেষ্টা করেন, তার ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অরগানাইজেশন (উমনো) সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। সে হিসাবে সংখ্যালঘু সরকার হিসেবে দেশ শাসন করার সুযোগ তারা পেতে পারেন।
নির্বাচনে উমনো ৫৪টি ও পিকেআর ৪২টি করে আসন পেয়েছে। আর নাজিবের বারিসান ন্যাশনাল (বিএন) জোট পেয়েছে ৭৯টি।
ব্রিটিশদের কাছ থেকে মালয়েশিয়ার স্বাধীনতা অর্জনের পর কোনো বাধাবিপত্তি ছাড়াই গত ছয় দশক দেশ শাসন করেছিল এ জোট। কিন্তু নাজিবের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ জোটটিকে কাবু করে ফেলেছে।